১৯৬৪ সালে মুরারিচাঁদ (এমসি) ইন্টারমিডিয়েট কলেজ নামে যাত্রা শুরু করে বর্তমান সিলেট সরকারি কলেজ। তবে এতোদিন এই কলেজে চালু ছিলো না ছাত্রী হল। ২০০৫ সালে একটি ছাত্রী হল নির্মাণ করা হলেও তা এতোদিন বন্ধ ছিলো। অবশেষে কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৫ বছর পর ও হল নির্মাণের ১৪ বছর পর কলেজটিতে ছাত্রী হল চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের শুরু থেকে ১০০ আসনের এই ছাত্রী হল চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে হলে থাকতে ইচ্ছুক ছাত্রীদের কাছ থেকে আবেদন সংগ্রহ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই আবেদনগুলো যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর একমাত্রটি ছাত্র হলটিও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর ছাত্র হলে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর প্রায় নয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ৩০০ আসনের ছাত্র হল। চলতি বছর এই হলটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখন হলের সংস্কার কাজ চলছে। সংস্কার কাজ শেষে আগামী জানুয়ারি এই ছাত্র হল পুনরায় চালুর আশা কলেজ কর্তৃপক্ষের।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মুরারিচাঁদ (এমসি) ইন্টারমিডিয়েট কলেজ নামে এই কলেজটি যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৯৮৮ সালে এমসি কলেজ থেকে আলাদা হয়ে সিলেট সরকারি কলেজ নামে আলাদা কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই কলেজটিতে শিক্ষার্থী রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার।
ছাত্রী হল না থাকা ও ছাত্র হল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই কলেজটির শিক্ষার্থীদের। দুরের শিক্ষার্থীদের কলেজের পাশে মেস ভাড়া করে থাকতে হয়। ফলে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের।
কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, অনেক বাড়ির মালিক ব্যাচেলরদের কাছে বাসা ভাড়া দিতে চান না। ফলে দূরদূরান্ত থেকে নিয়মিত ক্লাসে আসতে অসুবিধের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় ছাত্রাবাস আবার চালু হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার অনেকটাই দূর হবে।
সিলেট সরকারি কলেজ সূত্রে জানা যায়,
১০০ আসনের ৪তলা বিশিষ্ট ছাত্রী হলটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে। তবে
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরও প্রায় ১৪ বছর বন্ধ ছিলো হলটি। কলেজ কর্তৃপক্ষ
জানান, এতোদিন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় এই হলটি ব্যবহার করা যায়নি।
সম্প্রতি এতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার ছাত্রী হল
চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাতেই চালু করার কথা রয়েছে এ ছাত্রী
হল।
অপরদিকে, ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর একমাত্র ছাত্র হলে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় তারা ছাত্রাবাসের ৫২টি কক্ষের দখল করে নেয়। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেয়। এরপর অর্ধ-যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল ছাত্রাবাসটি। পূর্বে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নিলেও নানা বাঁধার কারণে ছাত্রাবাসটি সংস্কার করা যাচ্ছিল না। দীর্ঘদিন পর এবার এই ছাত্র হলটি সংস্কার করা হচ্ছে।
সিলেট সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. ফজলুর রহমান মামুন বলেন, ছাত্রী হল চালুর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতেই হলটিতে ছাত্রীদের তোলা হবে। এছাড়া ছাত্র হলের সংস্কার কাজও শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ছাত্রহলটির চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিনিধি