Home » ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত

অনলাইন ডেস্ক: যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।

কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার এই দিনটি ধর্মীয়ভাবে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে এ দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পবিত্রতম দিবস।হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) ও তাঁর পরিবার এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।

এজন্যই যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারা দুনিয়ার মুসলমানরা এ দিনটি পালন করে। বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটি।আশুরা উপলক্ষে পুরনো ঢাকার হোসেনী দালানের সামনে থেকে সকালে বের হয় শিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এই তাজিয়া মিছিল বের হয়।

কালো-লাল-সবুজের নিশান উড়িয়ে, কারবালার শোকের মাতম উঠেছে হাজার হাজার মানুষের মিছিলে। বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম ধ্বনি তুলে এগিয়ে যায় মিছিল, সবার পা খালি। মিছিলে ছিল ‘বৈল দল (ঘণ্টা পড়া তরুণ)’। কেউ বা নওহা (শোকগীতি) পড়ছিল। ঢাকায় হোসেনী দালান ঘিরে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের ঐতিহ্য কয়েকশ’ বছরের।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তাজিয়া মিছিলে পাইক (শরীর রক্তাক্ত করা) দলভুক্ত ব্যক্তিদের দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে।

মিছিলের সামনে ছিল কালো কাপড়ের ইমাম হোসেনের (র.) তাজিয়া (প্রতীকী কবর)। নারী-পুরুষ শিশুদের হাতে অসংখ্য কালো, লাল ও সবুজ নিশান। তরুণদের হাতে হাতে ছিল বিচিত্র আলাম (দীর্ঘ লাঠির মাথায় পতাকা)।তাজিয়া মিছিলটি বকশিবাজার, উর্দ্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, গৌর-এ শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে জিগাতলা (ধানমন্ডি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হয়। পথের দু’পাশে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষ ছাদে দাঁড়িয়ে, জানালা দিয়ে মিছিল উপভোগ করে। পুরো মিছিল ঘিরে ছিল পুলিশ, র‌্যাবসহ বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক আজ বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে।

তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয় হোসেনী দালানে। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সকালে মিছিলে আসা লোকজনকে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হয়।
কারবালার ঘটনা স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। 
শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল রয়েছে। কারবালার শোকাবহ এই ঘটনা অর্থাৎ পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *