কল্লা-কাটরা বা ছেলে ধরার গুজবে সিলেটসহ সারাদেশে চলছে তোলপাড়। বিভিন্ন স্থানে কেবলই সন্দেহের বশে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। এসব ঘটনায় ইতিপূর্বে কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বিষয়টি যখন মহামারিতে পরিণত হওয়ার উপক্রম, ঠিক তখনই মাঠে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতামূলক সভা শুরু করেছে তারা। দ্রুত এর সুফল পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদী সচেতন মহল।
ছেলেধরা বা কল্লা-কাটরার গুজব প্রতিরোধে কানাইঘাট পুলিশ সোমবার থেকে মাইকিং শুরু করেছে। উপজেলা সদরসহ আশ-পাশ এলাকায় তাদের প্রচারণা ব্যাপক সাঁড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বুধবার সিলেটজুড়ে পুলিশী তৎপরতা সচেতন নাগরকিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিষয়টিকে খুবই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন তারা।
দিনটিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মিরাবাজারস্থ জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, মিরের ময়দানস্থ পুলিশ লাইন্স উচ্চ বিদ্যালয়, মধুশহীদস্থ পুলিশ লাইন্স প্রাথমিক বিদ্যালয় , সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও মিরাবাজারস্থ মডেল হাইস্কুলে গুজব প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালায়।
এছাড়া জালালাবাদ থানাধীন বাদাঘাট মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ, মইয়ারচর হাইস্কুল, মোগলাবাজার থানাধীন হাজী মোহাম্মদ রাজা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্বভাগ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুরমা থানাধীন দক্ষিণ সুরমা সরকারী কলেজ, সাউথ সুরমা উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ সুরমা সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, নছিবা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, এয়ারপোর্ট থানাধীন লাখাউরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এয়ারপোর্ট উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহপরান (রহ.) থানাধীন শাহজালাল উপশহর হাই স্কুল কৃষ্ণ গোবিন্দ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
এদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে এমন ধরণের প্রচারণা চালিয়েছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গোয়াইনঘাট সার্কেল) মো. নজরুল ইসলাম। এসময় উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এ উপজেলায় ইলামিক ফাউন্ডেশনও কাজ শুরু করেছে। তারা মসজিদে মসজিদে গুজব প্রতিরোধে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের নেতৃত্বে উপজেলা সদর ও আশপাশ এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলা সদর, কমলগঞ্জ ও জুড়ি, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় একই ধরণের কার্যক্রম চালিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
এসব
প্রচারণা ও সভায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয় জনসাধারণ ও কোমলমতি
শিক্ষার্থীদের, পদ্মাসেতুতে মানুষের মাথা ও রক্তের প্রয়োজন বলে যে গুজব
ছড়ানো হয়েছে তা ভালোভাবে তাদের সামনে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি গুজব
ছড়ানো যে ফৌজদারি অপরাধ তাও তারা বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এমন
কার্যক্রম আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
প্রতিনিধি