গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার মাঝে একজন আরেকজনকে ‘ছেলেধরা’ বলায় গণধোলাই খেতে হয়েছে দুজনকেই। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নয়নপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গণধোলাই দেওয়ার পর স্বামী পালিয়ে গেলেও স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, পরিবারের এক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রিকশা খুঁজছিলেন ওই স্বামী-স্ত্রী। এর মধ্যে ঝগড়া বাধে দুজনের। একপর্যায়ে চরমপর্যায়ে চলে যায় সেই ঝগড়া। এর মধ্যেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামীকে ইঙ্গিত করে ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করে ওঠেন স্ত্রী। তখন স্বামীও স্ত্রীকে ইঙ্গিত করে ‘ছেলেধরা-ছেলেধরা’ চিৎকার করতে থাকেন। পরিবারের ওই বন্ধুটি দুজনকে সামলাতে চাইলেও পারছিলেন না।
ততক্ষণে আশেপাশের মানুষজন জড়ো হয়ে যায়। একপর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীকে আলাদা করে পেটাতে শুরু করেন তারা। গণধোলাইয়ের শিকার হন ওই পরিবারিক বন্ধুও। বিক্ষুব্ধ জনতার গলধোলাই খেয়ে স্বামী ও বন্ধুটি পালিয়ে গেলেও বাঁচতে পারেননি স্ত্রী।
জানা গেছে, ওই নারীর নাম তানিয়া। তিনি স্থানীয় বেড়াইদেরচালা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এবিএম তাজউদ্দিনের মেয়ে। গণপিটুনি খাওয়ার সময় তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তার স্বামী আরেক বিয়ে করেছেন শুনে ঝগড়া বাধে তাদের মধ্যে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে,ছেলেধরা নন। ’ কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা তার কথা কানে তোলেনি। পরে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তানিয়াকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বার বার একই কথা বলেছেন।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল হক জানান, তানিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা তাজউদ্দিনের মেয়ে বলে জানিয়েছেন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া করছিলেন। সে সময় একজন আরেকজনকে ছেলেধরা বলায় জনতা গণধোলাই দেয় তাদের।
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতিনিধি