মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় এবার ১০৭ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। প্রথমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শনো নোটিশ করা হচ্ছে। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও স্থগিত, অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি ও পাঠদানের অনুমোদন বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে সবচেয়ে বেশি ৫৯টি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৪৩টি, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের দুটি, দিনাজপুর, রাজশাহী ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের একটি করে প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়েফ উল্যা বলেন, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আমরা প্রথমে শোকজ করবো। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও বাতিলের সুপারিশ করা হবে। আর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে পরে সব প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি বাতিল ও পাঠদানের অনুমোদন স্থগিতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন পাস না করা ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি এমপিওভুক্ত। ২০১৮ সালের দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান ছিল ৯৭টি। এবার তা কমেছে। শাস্তির আওতায় আনলে আরও কমে আসবে বলে জানান শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. প্রকৌশলী সুশীল কুমার পাল বলেন, ‘শূন্য পাস প্রতিষ্ঠান ৪৩টি হলেও আমরা তা বলবো না। অনেক পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক নম্বর না আসায় এমনটা হয়েছে। এটি অবশ্যই কমে আসবে।’ তবে কেউ পাস করেনি এসব প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
বরিশাল বোর্ডের দুটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি। এই দুটি প্রতিষ্ঠানকেই শোকজ করা হয়েছে। এরপর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. আনারুল হক প্রাং বলেন, ‘কেউ পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠান এবার একটি। আগে বেশি ছিল, বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে এ হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে একটিও যাতে না থাকে সে চেষ্টা রয়েছে।’
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘কেউ পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠান এবার একটি। এর আগে বেশি ছিল, তা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পরে সেটাও থাকবে না।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে (কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড) বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ৬ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। ফলাফল অনুযায়ী আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি।
বার্তা বিভাগ প্রধান