নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ক থেকে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল। মাঠ বদলালেও দৃশ্য বদলায়নি। আজ ভোররাত চারটায় উঠে যাঁরা বাংলাদেশের ইনিংসটা দেখেননি, ঘুম থেকে উঠে যখন নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থেকে ম্যাচ দেখা শুরু করেছেন, মনে হতে পারে আগের ম্যাচটাই কি দেখছি?
নিউজিল্যান্ড টসে জিতে ফিল্ডিংই নিয়েছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের সেই বিপর্যয়। গত ম্যাচের মতোই তামিম ইকবাল করেছেন ৫, লিটন দাস ১ রান। ৫ রানে ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। স্কোরবোর্ডে ১০০ রান না উঠতেই টপ অর্ডার ধসে পড়েছে, পড়েছে ৫ উইকেট। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আবারও মোহাম্মদ মিঠুনের লড়াই, একটা ফিফটি। সেদিন মিঠুনের সঙ্গে সাইফউদ্দিনের ৮৪ রানের একটা জুটি হয়েছিল। আজ সেটি হয়েছে সাব্বির রহমানের সঙ্গে (৭৫) রানের। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৪৮.৫ ওভারে অলআউট ২৩২ রানে। আজ ৪৯.৪ ওভারে ২২৬। প্রথম ওয়ানডের মতো আজও নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের লক্ষ্যটা টপকে গেছে ৮ উইকেট হাতে রেখে।
মিল এখানেই শেষ নয়, গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন মার্টিন গাপটিল। আজও করলেন। পার্থক্যটা হচ্ছে প্রথম ওয়ানডেতে গাপটিল অপরাজিত ছিলেন ১১৭ রানে, আজ আউট হয়েছেন ১১৮ রানে। পার্থক্য আরও একটা আছে। প্রথম ম্যাচে গাপটিল বাংলাদেশের বোলারদের ভীষণ সমীহ করেছিলেন। আজ সেসব কিছু ছিল না। কিউই ওপেনার বুঝে গেছেন, নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে বাংলাদেশের বোলাররা নির্বিষ, বৈরী পরিবেশে তাঁরা খুব একটা হুল ফোটাতে পারেন না! কাজেই আজ তাঁদের ওপর চড়াও হয়ে যায়। হয়েছেনও। ৭৬ বলে সেঞ্চুরি করেছেন। মোস্তাফিজুর রহমানের বাউন্সারটা জোর করে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে যখন লিটন দাসের ক্যাচ হলেন, নামের পাশে জমা হয়ে গেছে ৮৮ বলে ১১৮ রান। ১৪ চার আর ৪ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটার স্ট্রাইকরেট ১৩৪.০৯। গাপটিল-উইলিয়ামসনের দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করা ১৪৩ রানের জুটি যে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, তা না বলে বলা ভালো ম্যাচটা আরও একপেশে করে দিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলারদের প্রাপ্তি বলতে মোস্তাফিজের ২ উইকেট। আর গত ম্যাচের চিত্রনাট্য মেনে এটিতেও ম্যাচসেরা গাপটিল।
টানা দুই ম্যাচ হেরে সিরিজও হাতছাড়া হয়ে গেছে বাংলাদেশের। ২০১০ সাল থেকে দুই দলের সিরিজে একটা অভিন্ন দৃশ্য হচ্ছে, যারা হারে তো হারতেই থাকে। যে দল সিরিজ জিতবে, তারা প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করেই জিতবে। এবারও কি সেটিই হতে যাচ্ছে?
প্রতিনিধি