দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিল রিয়াল মাদ্রিদ। দারুণ খেলল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও। তবে দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসল লস ব্লাঙ্কোরা। আগুনে ডার্বিতে অ্যাটলেটিকোকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে তারা। রোমাঞ্চকর এ জয়ে লা লিগা পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠেছে রিয়াল।
শনিবার ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামে শুরুটা শুভ করে রিয়াল। ১৬ মিনিটে দর্শনীয় গোলে দলকে লিড এনে দেন কাসেমিরো। কর্নার কিক নেন টনি ক্রুস। তবে তা বিপদমুক্ত করতে পারেননি অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডাররা। ডি- বক্সে
বল পেয়ে যান কাসেমিরো। দুর্দান্ত বাইসাইকেল কিকে বল জালে জড়ান তিনি।
তবে অতিথিদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের গতি বাড়ায় অ্যাটলেটিকো। ২৫ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। মাঝমাঠে ভিনিসিউসের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে আঁতোয়া গ্রিজম্যানকে বাড়ান আনহেল কোররেয়া। উল্কার গতিতে কাসেমিরো ও ভারানেকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
পরে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। বেশ ক’টি সুযোগ পায় অ্যাটলেটিকো। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি দ্য ইন্ডিয়ানসরা। কিন্তু সেই ভুল করেনি রিয়াল। ৪৩ মিনিটে সফল স্পট কিকে নিশানাভেদ করেন সার্জিও রামোস। ডি-বক্সে ভিনিসিউসকে ডিফেন্ডার হোসে হিমেনেস ফাউল করলে ভিএআরের সহায়তায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
কিছুক্ষণ পরই ফের সমতায় ফেরার আনন্দে মাতে অ্যাটলেটিকো। দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বল দারুণ ক্ষীপ্রতায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে জালে জড়ান আলভারো মোরাতা। তবে অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।
এরপর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে পড়ে অ্যাটলেটিকো। তোলে আক্রমণের ঢেউ। প্রতিহত করতে সর্বস্ব উজাড় করে দেয় রিয়াল। ফলে দুদলের খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাতেও আগ্রাসী ভাব চলে আসে। যা ম্যাচে বাড়তি উত্তেজনা ছড়ায়।
৫৮ মিনিটে ভিনিসিউসকে তুলে বেলকে নামান সান্তিয়াগো সোলারি। ৭৪ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে গুরুর আস্থার প্রতিদান দেন শিষ্য। লুকা মদ্রিচের পাস ডি-বক্সে পেয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ওয়েলস ফরোয়ার্ড।
ব্যাবধান বেড়ে গেড়লে বেজায় আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে অ্যাটলেটিকো।
স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক শক্তির প্রদর্শনী শুরু হয়। দু’দলই ফাউলের খেলায় মত্ত হয়ে ওঠে। একদল গোল পেতে, অপর দল ঠেকাতে। ৮০ মিনিটে ক্রুসকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন টমাস মার্টে। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ঘরের ছেলেরা। বাকি সময়ে আর পেরে ওঠেনি তারা। ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারের জ্বালা নিয়ে মাঠ ছাড়েন ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। দাপুটে জয়ে বিজয়ীর বেশে ফেরেন রামোসরা।
ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পাশাপাশি ছিল কিছু বিশ্রী দৃশ্য। ম্যাচে মোট ৩৭বার ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি। অ্যাটলেটিকো করেছে ২১বার, রিয়াল ১৬বার। আর ১১বার হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
২৩ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো রিয়াল। ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে নেমে গেল অ্যাটলেটিকো। ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। স্বাভাবিকভাবেই লিগ শিরোপার লড়াই জমে গেল।
প্রতিনিধি