সৌদি আরব ইয়েমেন ওমান নিয়ে গড়া ভৌগোলিকভাবে বিশাল ভূখণ্ডটি যেন ভারত মহাসাগরের পাড়ে ধ্যানে বসা এক মৌন ঋষি, আর কাতার যেন তার কোলে বসা এক দেবশিশু।
দেশটার আকৃতি বামহাতের পাঁচটি আঙ্গুল একসঙ্গে সোজা করে রাখলে যে রকম দেখায়- অনেকটা সেরকম। আর রাজধানী দোহার অবস্থান তখন ঠিক বুড়ো আঙ্গুলের ডগায়। মাত্র ২০ লাখের মতো জনসংখ্যার চার হাজার ৪০০ বর্গমাইলের ছোট্ট একটি দেশ কাতার।
কিন্তু ক্ষুদ্র এই মুসলিম দেশটিই বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ! আর দেশটির বিভিন্ন মসজিদে মোয়াজ্জেম ও ইমামতি পেশায় নিয়োজিতদের বড় অংশই বাংলাদেশি। প্রবাসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন আলেমরা।
২ হাজার ৪শ’র মতো মসজিদে প্রায় ১ হাজার ৩শ’ বাংলাদেশি ইমাম ও মোয়াজ্জেম বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন কাতারে। কাতারিদের কাছে মুসলিম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি ইমাম-মোয়াজ্জেমরা বেশ সম্মানিত ব্যক্তি। শুদ্ধ উচ্চারণে কোরআন তেলওয়াতের কারণে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে মনে করেন প্রবাসী ইমামরা।
তারা বলেন, ‘আমাদের বেতনের বিষয়ে তারা খেয়াল রাখছেন। কাতারের নাগরিকদের মতই আমাদের সম্মান করা হয়। এখানকার অধিকাংশ মসজিদের মধ্যে আলহামদুলিল্লাহ বাংলাদেশি ভায়েরা ইমাম-মোয়াজ্জেম। আমাদের প্রতি তাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি’
ইমামদের কাতারি নাগরিকদের কাছে নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সঠিকভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন, কমিউনিটির নেতারা।
কমিউনিটি নেতা আলমগীর হোসেন আলী বলেন, আমাদের কোন খারাপ কাজের জন্যে কাতারের কাছে সমালোচিত না হয়। আমাদের প্রতিটি কাজ প্রতিটা বলা চলাফেরা যাতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশিদের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়টি সেদেশের নাগরিকদের কাছে তুলে ধরা ইমাম মোয়াজ্জেমদের দায়িত্ব বলে মনে করেন, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, ‘সব ধর্ম মিলেমিশে আমরা যেমন বাস করছি তেমন তাদের বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে এই বার্তা কাতারের বিভিন্ন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে এতে আমাদের ইমেজ আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি।’
মেধা, আচরণ, মনোমুগ্ধকর তিলাওয়াত, শুদ্ধ আরবি ও অন্যান্য সাফল্যের কারণে কাতারে বাংলাদেশি ইমাম-মোয়াজ্জেমদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
নির্বাহী সম্পাদক