একমাত্র ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে মৃত্যু সজ্জায় প্রয়াত ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফানের মা আমিন চৌধুরী। মঙ্গল ও বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বিলাপ করেন তিনি। ছেলের শোকে মায়ের কান্না থামছে না কিছুতেই। এতকিছুর পরও ভাঙছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঘুম।
দুই বছর হয়ে গেলেও আসামিদের গ্রেফতার ও বিচার না হওয়ায় বারবার অনশন করছেন ওই হতভাগ্য মা।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আসামিরা। পুলিশ আসামিদের
পলাতক বললেও হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে আসামিদের বলে জানা গেছে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বের করা স্যুভেনিরে দিয়াজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলমগীর টিপুর ছবিসংবলিত শুভেচ্ছা বাণী দেখে মেনে নিতে পারেননি তিনি। জাহেদা আমিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী।
পরে মাঠে লুটিয়ে পড়ে স্রষ্টার কাছে বিচার চান তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
জাহেদা আমিন চৌধুরীর বড় মেয়ে জুবাঈদা সরওয়ার চৌধুরী বলেন, অসুস্থ অবস্থায় মাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের বাসায় আনা হয়। এর পর থেকে তিনি অসুস্থ। ছেলে হত্যার বিচার চাইছেন। খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ রেখেছেন।
ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে একাধিকবার কর্মসূচি পালন করেছেন জাহেদা আমিন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে ২০১৭ সালের ২৮
নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন পালন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার ভাড়া বাসা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর। দুদিন পর পুলিশ জানায়, তাকে হত্যা করার আলামত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মেলেনি।
এর পর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর জাহেদা আমিন বাদী হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, তার ভাই আরমান হোসেন সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন।
পরে একই বছরের ৬ ডিসেম্বর লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।
প্রতিনিধি