Home » শত্রুতার রাজনীতি ছেড়ে ঐক্যের ডাক ট্রাম্পের

শত্রুতার রাজনীতি ছেড়ে ঐক্যের ডাক ট্রাম্পের

গুনতে গুনতে টানা ৩৫ দিন। মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম শাটডাউনের সে স্মৃতি এখনও মুছে যায়নি ডেমোক্র্যাটদেন মন থেকে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ইস্যুতে যার সূত্রপাত। যে কারণে কংগ্রেসসহ পুরো জাতিই স্পষ্টত দুই ভাগ ।

‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে সেই বিভক্তি ভাঙার কসরতই দেখালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা) জাতির উদ্দেশে নিজের দ্বিতীয় বার্ষিক ভাষণে পুরনো শত্রুতা ছেড়ে ‘রাজনৈতিক ঐক্য’র ডাক দেন ট্রাম্প।

ঐক্যের ডাক দিলেও এদিন দেয়াল নির্মাণে নিজের অটল মনোভাবই প্রকাশ করেন তিনি। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠকের সময় ও স্থানের বিষয়টি ঘোষণা করেন। তুলে ধরেন তার সরকারের সাফল্যের নানা ফিরিস্তি। চীন ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে মার্কিন নীতি নিয়েও কথা বলেন তিনি। বিবিসি, সিএনএন।

নির্ধারিত সময়ের ঠিক আগেই কংগ্রেসে ঢোকেন ট্রাম্প। উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল পুরো কংগ্রেস হলে। একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছিলেন কংগ্রেসম্যানরা। প্রেসিডেন্টকে দেখেই যার যার জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ান সবাই। করতালির আনন্দধ্বনিতে প্রিয় প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান। হাত মেলান ট্রাম্পও। হাসতে হাসতে সোজা উঠে পড়েন ডায়াসে। করমর্দন করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে। হাত বাড়িয়ে দেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির দিকে।

এরপর ঘুরে দাঁড়িয়েই সেই স্বভাবসুলভ হাসি আর চেনা হাত নাড়ান। ম্যাডাম স্পিকার, ভাইস প্রেসিডেন্ট, ফার্স্ট লেডি আর প্রিয় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করেন তার দ্বিতীয় বারের স্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণ। গোটা কংগ্রেস হল ততক্ষণে নীরব। কি বলবেন প্রেসিডেন্ট, কি নির্দেশনা থাকবে তার ভাষণে- যেন সেটাই গিলে খাওয়ার প্রয়াস সবার।

আর একের পর এক কথার বাণে তাদের বশে আনছিলেন ট্রাম্প। আমেরিকার স্বার্থে দলমত ভুলে উপস্থিতদের ঐক্যের ডাক দিয়ে শুরুতেই সবচেয়ে বড় বাণটা মারেন ট্রাম্প। মার্কিনদের উদ্দেশে বলেন, আমরা চাইলেই ‘দশকের পর দশক ধরে চলতে থাকা রাজনৈতিক স্থবিরতা ভাঙতে পারি। পুরনো বিভক্তিতে সেতু তৈরি করতে পারি, পুরনো ক্ষত নিরাময় করতে পারি, নতুন সংযোগ স্থাপন করতে পারি।’

ভাষণে দেশের বাণিজ্য, অর্থনীতি, রাজনীতি, অভিবাসীসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের মতামতও তুলে ধরেন তিনি। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে মাদক, চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এদিনই ট্রাম্প ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ভিয়েতনামে তার দ্বিতীয় বৈঠক হবে বলে ঘোষণা দেন। এর আগে গত বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠক হয়। মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতার ওটাই ছিল প্রথম বৈঠক।

‘চুজিং গ্রেটনেস’ বা ‘মহত্ত্বকে বেছে নেয়া’ থিম নিয়ে জাতির উদ্দেশে ট্রাম্প ৫২ মিনিট ভাষণ দেন। কংগ্রেসের সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ দু’কক্ষের সদস্যসহ অতিথিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ভাষণের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় যে এজেন্ডা নিয়ে আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি, এটা কোনো রিপাবলিকান এজেন্ডাও নয়, কোনো ডেমোক্র্যাট এজেন্ডাও নয়। এটা মার্কিন জনগণের এজেন্ডা।’ তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাজনীতিতে নতুন নতুন সুযোগ রয়েছে, আমরা যদি সেগুলো একসঙ্গে সাহস করে গ্রহণ করি।’ এর মাধ্যমে তিনি মূলত মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ প্রস্তাব মেনে নিতে ডেমোক্র্যাটদের আমন্ত্রণ জানান।

ভাষণে গত ২ বছরে কি কি উন্নয়ন করেছে তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ২ বছরে ৫৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেছি। যা অনেকের অসম্ভব মনে হতে পারে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *