বাংলা ভাষায় আমি আমার মনের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করি। এটি আমার মায়ের ভাষা। মায়ের জন্য যেমন ভালোবাসা থাকে তেমনই ভাষার জন্যও আমাদের ভালোবাসা থাকতে হবে। ভাষার মাসে বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের মমত্ব বা কর্তব্যবোধ নিয়ে এমনটাই বললেন জনপ্রিয় অভিনেতা সজল। তিনি আরো বলেন, ফেব্রুয়ারিতেই আমাদের অনেকের মধ্যে ভাষাপ্রীতি দেখা যায়। এটা ঠিক না। মায়ের ভাষাকে সবসময়ই সম্মান করতে হবে। আমি মনে করি, সুন্দরভাবে বাংলায় কথা বলতে পারাটাও বিশেষ একটি গুণ।
এই ভাষার জন্য আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন। তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা-সম্মান থাকতে হবে সবসময়। আর অন্য ভাষার প্রতিও সম্মান দেখাতে হবে। তবে তা নিজের ভাষাকে উপেক্ষা করে নয়। এদিকে বাংলা একাডেমিতে চলছে বই মেলা। এর প্রসঙ্গ ধরেই সজল বলেন, এটি বইপ্রেমিদের প্রানের মেলা। শুধু বইপ্রেমিরা নন, অন্যরাও এই মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। নতুন বই কেনার আনন্দ অন্য রকম। প্রতি বছরই আমি বইমেলায় যাই। শুটিংয়ের জন্য সব সময় ব্যস্ত থাকি।
তবুও চেষ্টা করি বইমেলা থেকে ঘুরে আসতে। আমাদের অনেক তারকা শিল্পীর বই প্রকাশ হচ্ছে। ইচ্ছে আছে সেসব বই কেনার। প্রতিবারের মতো এবারও ভাষা দিবসের নাটকে তাকে দেখা যেতে পারে বলে জানান সজল। তার আগে আসছে ভালোবাসা দিবসে টিভি পর্দায় থাকছেন তিনি। সে লক্ষ্যে আগামীকাল শরিফুল ইসলাম শরিফের একটি নাটকের শুটিং করবেন। এটি ভালোবাসা দিবসের জন্যই নির্মাণ হচ্ছে। গেল কয়েক বছরে দেশের বাইরে টিভি নাটকের শুটিং বেড়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এই বিষয়টিকে সজল কিভাবে দেখছেন? তার ভাষ্য, দেশের বাইরে শুটিং করাকে আমি ভিন্ন ভাবে দেখি না।
তবে অবশ্যই দেখতে হবে দেশের বাইরে আমাকে কখন যেতে হবে। যদি গল্পটা এমন হয়, দেশের বাইরে ছাড়া বিকল্প নেই তাহলে সেখানে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু শুধু লোকেশনের নামে কিংবা অন্য কোনো কারণে দেশের বাইরে শুটিং করার কোনো মানে হয় না। দেশকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে। আমাদের দেশে টিভি নাটকে দর্শক নেই বলে অভিযোগ রয়েছে? সত্যি কি তাই? এই প্রশ্নের উত্তরে সজল বলেন, ইউটিউবে দেখা যায় দর্শক আমাদের নাটক কতটা দেখেন। আমাদের দর্শক ভারতীয় সিরিয়াল দেখছেন বলেও কেউ কেউ বলছেন। আমি তো দেখেছি কলকাতায়ও আমাদের নাটকের প্রচুর দর্শক রয়েছে।
তারা ইউটিউবে আমাদের নাটক নিয়মিত দেখেন। তাদের অনেকেই আমাদের নাটকের প্রশংসা করে আমাকে ফেসবুকে অনেক কিছু জানান। গোটা বিশ্ব এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। দর্শক সব টিভি চ্যানেল কিংবা নাটক-ফিল্ম দেখবে এটাই স্বাভাবিক। এই অভিনেতা সম্প্রতি কলকাতা থেকে ঘুরে এসেছেন। কলকাতার একজন নির্মাতার নির্দেশনায় একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি। অভিনয়ে বাইরে এই অভিনেতা সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গেও যুক্ত আছেন।
২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে ‘ঋতু’ নামে একটি প্রকল্প মেয়েদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে কাজ করছেন তিনি। তার সঙ্গে এই প্রকল্পে আরো আছেন চিত্রনায়িকা পূর্নিমা। এই প্রকল্প নিয়ে সজল বলেন, বাংলাদেশের স্কুল পড়–য়া মেয়েদের নিয়ে কাজ করছে ‘ঋতু’ প্রকল্প। এদেশে অনেক কিশোরী প্রথম মাসিক হওয়ার আগে এ সম্পর্কে কিছুই জানে না। স্বাস্থ্যসম্মত মাসিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদের জানাশোনা আরো কম। গ্রাম অঞ্চলে এটি নিয়ে নানা কুসংস্কার রয়েছে। ‘ঋতু’ প্রকল্প এমনভাবে জনসচেতনতা তৈরি করতে চায়, যেন মাসিক সম্পর্কে ভয়-ভীতি ও কুসংষ্কার ধীরে ধীরে কমে যায়। এই প্রকল্প বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যেও কাজ করছে।
প্রতিনিধি